প্রকাশিত: Thu, Aug 17, 2023 11:23 PM
আপডেট: Sun, Jun 29, 2025 8:48 PM

[১]ইসলাম বা শরীয়তে গায়েবানা জানাজা বলে কিছু নেই: মাওলানা মিছবাহুর রহমান চৌধুরী

ভূঁইয়া আশিক রহমান: [২] গায়েবানা জানাজাকে সম্পূর্ণ ইসলামবিরোধী ও প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড হিসেবে আখ্যায়িত করে এই ইসলামী চিন্তাবিদ একটা উদাহরণ টানেন। তিনি বলেন, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আমলে মদীনায় একটা গায়েবানা জানাজা হয়েছিলো। আবিসিনিয়ার রাজা আন-নাজাশি যখন মারা যান, আল্লাহর রাসুল জিব্রাঈল (আ.) মারফত জানতে পারলেন যে, আবিসিনিয়ার রাজা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন, কিন্তু তা তিনি প্রকাশ করেননি। তখন মহানবী আল্লাহরই হুকুমে রাজার গায়েবানা জানাজা পড়েছিলেন। এটা ষষ্ঠ শতাব্দীর ঘটনা। 

[৩] মিছবাহুর রহমান চৌধুরী বলেন, কেউ কেউ বলেন যে, আল্লাহ রাসুল (সা.) এর জন্য এমন এক ব্যবস্থা করেছিলেন, যাতে রাজার লাশ সামনাসামনি দেখিয়ে দিয়েছিলেন। অনেক সাহাবি বিভিন্ন দেশে মারা গেছেন, কারও কারও লাশও পাওয়া যায়নি। কারও জন্য কখনো কোনো গায়েবানা জানাজা পড়া হয়নি। পড়তে বলাও হয়নি। 

[৪] তিনি বলেন, যখন বসনিয়া যুদ্ধ চলছিলো, তখন বসনিয়ার একজন নারী সাংবাদিক ‘আগুনের কারাগার’ নামে ইংরেজিতে একটি বই লিখেছেন। বইটি বাংলাসহ বিশে^র ৪০টি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। বইয়ে তিনি লিখেছেন, যুদ্ধের সময় অনেক মুসলমানের লাশ গুম করা হয়েছিলো। ওই সময় ঢাকায় আমি তাদের জন্য একটা গায়েবানা জানাজার আয়োজন করেছিলাম। তখন জামায়াতে ইসলামীর আলেমরা গায়েবানা জানাজাকে একদম হারাম ও ইসলামবিরোধী বলে আখ্যায়িত করেছিলেন। 

[৫] সত্তরের দশকে ভোলায় যে জলোচ্ছ্বাস হয়েছিলো, তখন মওলানা ভাসানী গায়েবানা জানাজা পড়েছিলেন। জামায়াতের শীর্ষ নেতারা তখনও পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে এটাকে একটা নাটক ও ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড বলে আখ্যায়িত করেছিলেন। যে দল গায়েবানা জানাজা পড়াকে একদম হারাম মনে করে, তাদের আলেমরা এতোদিন যে ফতোয়া দিলেন, এখন গায়েবানা জানাজার নামে দেশের শান্তিশৃঙ্খলা নষ্ট করার জন্য সারাদেশে গায়েবানা জানার আয়োজন করলো! 

[৬] তিনি বলেন, জানাজার নামাজ ফরজে আইন নয়, ফরজে কেফায়া। যারা জানাজা পড়ে নেন, এতে যদি জানাজা সম্পন্ন হয়ে যায়, যারা অনুপস্থিত, তাদের জানাজা হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়। এটার নামই ফরজে কেফায়া। সবাইকে জানাজা পড়তে হয় না, কিছু সংখ্যক লোক জানাজা পড়ে নিলে, সবার দায়িত্ব পালন হয়ে যায়। 

[৭] মাওলানা মিছবাহুর রহমান চৌধুরী বলেন, আপনার বাড়িতে যদি কেউন ইন্তেকাল করেন, আপনি জানাজায় এটেন্ড করতে চান, কিন্তু আপনি সময়মতো যেতে পারলেন না, গিয়ে দেখলেন আপনার ভাই, চাচা, প্রতিবেশী জানাজা সম্পন্ন করে ফেলেছেন, তখন ধরে নিতে হবে আপনি জানাজায় ছিলেন। আপনার দায়িত্ব পালন হয়ে গেছে। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব